প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের অগ্রভাগ দেশের উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে। এটি সম্পূর্ণ উপকূল অতিক্রম করে রাত তিনটা-চারটার দিকে। রোববার (২৬ মে) রাত ৯টায় এতথ্য সংবাদকে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক।তিনি বলেন, ‘মোংলা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। তবে, এর ডায়ামিটার অনেক বড় হওয়ার কারণে সিস্টেমটি সম্পূর্ণরূপে উপকূল অতিক্রম করতে ৫-৭ ঘণ্টা সময় লাগবে।’তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমাল পশ্চিমবঙ্গের খেপুপাড়া এর মাঝে মোংলা, এইদিক দিয়ে উপকূল অতিক্রম করে উত্তর দিকে অগ্রসর হবে। এর ওপরে আছে- মেহেরপুর যশোর কুষ্টিয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ। স্থল নিম্ন চাপের বিষয়ে পরে বলবো আমরা।’‘১০ নম্বর সতর্কতা সংকেতের পাশাপাশি বাতাসের গতিবেগ ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত,’ ঘূর্ণিঝড় রিমালের এলাকায় বাতাসের বেগ থাকার কথা জানান তিনি।বিকেলে আবহাওয়াবিদ মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমাল এখন পর্যন্ত সরাসরি উত্তর দিকে এগোচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টির গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০-১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত। কোথাও কোথাও তা ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।’
কলাপাড়ায় জলোচ্ছ্বাছে ডুবে একজন নিহত ।
জেলার কলাপাড়ায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের পানির ঝুঁকি থেকে বোন ও ফুফুকে বাঁচাতে গিয়ে মো. শরীফ (২৭) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।রোববার দুপুরে ধূলাসর ইউনিয়নের কাউয়ারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শরীফ অনন্তপাড়া এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীফের ফুফু মাতোয়ারা বেগম কাউয়ার চর এলাকায় বসবাস করেন। ওই বাড়িতে তার বোনও ছিলেন। দুপুর ২টার দিকে অনন্তপাড়া থেকে শরীফ তার বড় ভাই ও ফুফাকে নিয়ে তাদের উদ্ধার করতে যান। মোংলা সমুদ্রবন্দরসহ সুন্দরবন উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত বাগেরহাটের মোংলা বন্দরসহ সুন্দরবন উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়। রোববার থেকেই দমকা বাতাসসহ থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে পুরো সুন্দরবন।রোববার মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ হারুন অর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র ও পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বিকেলে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে চার থেকে সাড়ে চার ফুট পানি বেড়ে সুন্দরবন তলিয়ে গেছে। রাতে পানির চাপ আরও বাড়বে।’‘প্রজননকেন্দ্রের বণ্যপ্রাণীর ক্ষয়-ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই।’বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে সম্ভাব্য ক্ষয়-ক্ষতি এড়াতে পুরো সুন্দরবন বিভাগের কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বন বিভাগের ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাম্পগুলোতে থাকা বনরক্ষীদের এরই মধ্যে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।