গল্লামারী বধ্যভূমি
একজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার কন্যা কবি ড. সেলিনা রশিদ, ময়মনসিংহ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ৭১‘এর মুক্তিযুদ্ধে তার বাবাকে হারান। পিতার শেষ চিহ্ন টুকু খুজতে দেশের বিভিন্ন বধ্যভূূমির মাটি সংগ্রহ করেন এবং নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত জননেত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রহশালায় তা সংরক্ষণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি আজ খুলনা জেলার বধ্যভূমির মাটি সংগ্রহ ও তথ্য সংগ্রহের কাজে। চলুন আজ দেখা যাক খুলনার গল্লামারী বধ্যভূমির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থানেই ছিল রেডিও পাকিস্তানের খুলনা শাখা। এই বধ্যভূমিকে ঘিরে গড়ে উঠে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। গণহত্যা ও নির্যাতন কেন্দ্র বেতার ভবন হয়ে উঠে বিশবিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবন। এখানে অনেক মুক্তিকামী মানুষ ও সাধারণ জনগণকে হত্যা নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। মূলত রাজাকার ও শান্তি কমিটির সহযোগিতায় এসব হত্যাকাণ্ড হত। এখানে জবাই করে বেশিরভাগ মানুষ মারা হত। প্রথম দিকে শুধুমাত্র রাতের বেলাতে নিরপরাধ মানুষদের হত্যা করা হলেও শেষের দিকে তারা দিনে রাতে সমানে নির্বিচারে হত্যা করতে থাকে। সারাদিন শহর ও গ্রাম হতে লোকদের ধরে এনে জেলখানা, হ্যালিপোর্ট ও ইউএফডি ক্লাবে জড়ো করা হত, রাত হলে তাদের হাত বেঁধে বেতার কেন্দ্রের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হত। । প্রতি রাতে প্রায় শতাধিক মানুষ হত্যা করা হত। এর সাথে আরো ছিল নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ। খুলনা শহর মুক্ত হবার পর গল্লামারী খাল ও এর আশেপাশের স্থান থেকে প্রায় পাঁচ ট্রাক ভর্তি মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড় পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, ঐ স্থানে আনুমানিক ১৫,০০০ মানুষ হত্যা করা হয়।