কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১১এপ্রিল) সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। যা পরে হল শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের এক মেয়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তার ব্যাচমেটদের। পরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইসিটি ডিপার্টমেন্টের ১৪ তম ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের গালিব ও তার বন্ধু আবদুল্লাহ আল কাউসারকে মারধর করে। পরবর্তীতে গালিব ১৩ তম ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে নিয়ে আসে৷ এ সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে বঙ্গবন্ধু হল ও ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী এসে হাজির হয়। যা পরবর্তী সময়ে বৃহৎ আকার ধারণ করে।
মারধরের শিকার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল কাউসার (আপন) বলেন, আমরা গেইটে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এসময় দত্ত হলের কেমিস্ট্রি ১৪ ব্যাচের আলভির ও আরেকজন আইসিটি ১৪ ব্যাচের তার নাম জানি না, আমাকে বলতেছে ‘তুই নাকি ডিপার্টমেন্টে পাকনামি করস?’ একথা বলে দুইটা থাপ্পড় মারছে। পরে গালিব ওদের জানাইলাম, ওরা (গালিব) তাদের গিয়ে ধরছে, কিরে ওরে মারছস কেন? পরে ওরা (আলভি) গালিব, মুজাহিদ সহ আমাদের মারছে।
তবে যে মেয়েকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা, তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের কথা কাটাকাটির সূত্র ধরে যে মারামারির কথা বলা হচ্ছে তার সঙ্গে আমার ও আমার হাজব্যান্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নাই। যারা এসব বলছে আমি তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিবো।
অপরদিকে মারধরের ব্যাপারে অভিযুক্ত আলভীর ভূঁইয়া বলেন, আপনের সাথে আমার ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ধাক্কা লাগে। তখন তাকে কোন ব্যাচ জিজ্ঞেস করি। তারপর তার সাথে কথা কাটাকাটি হলে, সে আমার শার্টের কলার ধরে। তারপর আমরা দুজন তাকে থাপ্পড় দিই। পরে বঙ্গবন্ধু হলের সেলিমসহ কয়েকজনের সাথে হাতাহাতি হয়।
এছাড়াও আলভীরও ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের সূত্র ধরে মারামারির ঘটনাটি অস্বীকার করেছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে এসে এটিকে মীমাংসা করতে পার্টি অফিসে যান। পরে সেখানে দুই হলের নেতৃবৃন্দ বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। যা থেকে হলগুলোতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় দত্ত হল ও বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা লাঠিসোটা, রড, গাছপালার ডাল ও পরিত্যক্ত আসবাবপত্র ভেঙে হল থেকে বেরিয়ে আসতে উদ্যত হয়। ঐসময় হল নেতৃত্ববৃন্দ তাদেরকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করে।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ঘটনা কী কারনে হয়েছে এর কারণ এখনও জানা যায়নি। উত্তেজনা কমলে আমরা বসে বিচার করে মিটমাট করবো।
সম্প্রতি হল কেন্দ্রিক এধরণের কয়েকটি ঘটনা ঘটার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, হল গুলোর দায়িত্বে যারা আছে তারা হলের সবকিছু ঠিক মতো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে হল ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙ্গে দিবো।
সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়েছি। উভয়পক্ষকে শান্ত করে হলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামীকাল প্রক্টরিয়াল বডি এ নিয়ে বসবে, কারও দোষ থাকলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।