ঘরের মানুষটিই তার একনিষ্ঠ সমর্থক। ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ যাই হোক, প্রিয় মানুষটির হয়ে গলা উঁচু করে সরব থাকেন তিনি। কে কী বলল ভাবনাতেও থাকে না, বলে যান উম্মে আহমেদ শিশির। সাকিব যখন চেনা ফর্মে সেই তিনিই চুপ থাকেন কী করে! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ওমানের বিপক্ষে ব্যাটে-বল যখন কথা বলল, সাকিব যখন নিজের মতো করে ফিরলেন তখন আর শিশিরকে থামায় কে? প্রেরণা দিতে গিয়ে জীবনসঙ্গীকে বললেন, ‘সবচেয়ে সমালোচিত ব্যক্তি হয়েও তুমি দেশের কথাই ভাবো!’
তবে এবার কিন্তু আর সাকিব পত্মীর কথা উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। চুন থেকে পান খসলেই কেন সমালোচনা হবে দেশসেরা ক্রিকেটারের? স্কটিশদের কাছে হারের পর টানা দুটি ম্যাচ বাংলাদেশ জিতে সুপার টুয়েলভে। কিন্তু একটা ক্ষত ঠিকই রয়ে গেছে ক্রিকেটারদের মনে। একটা কষ্ট কোথায় যেন উড়ে এসে ভর করেছে সাকিবের কথায়, ‘পাপন ভাই অনেক ইনভলভড থাকেন। স্বাভাবিকভাবেই উনার পরামর্শ সবার সাথে শেয়ার করেন। অনেক সময় কাজে আসতে পারে, অনেক সময় কাজে না-ও আসতে পারে। মাঝেমাঝে এমন পরামর্শ খারাপ না আসলে, ভালোই।’
কিন্তু সেই ভালোটা করতে গিয়ে বোর্ড প্রধান ক্রিকেটারদের যে কতটা চাপে ফেলে দেন, সামাজিকভাবে ছোট করেন সেটিও টাইগার শিবিরে দীর্ঘশ্বাসের জন্ম দেয়। তবে সাকিব বোধ হয় অন্য জগতের মানুষ! কে কী বলল, কোথায় কী হয়ে গেল, এসব থোরাই কেয়ার করেন তিনি। তাই তো ঠিক যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখন অসহায় আত্মসমর্পণের পথে না হেঁটে ঘুরে দাঁড়ান। কোণঠাসা বাঘের মতোই হয়ে উঠেন ভয়ঙ্কর!
বড় ক্রিকেটাররা নাকি এমনই, বড় মঞ্চ পেলে তো কথাই নেই। ২০১৯ এর বিশ্বকাপ যেখানে শেষ করেছিলেন, এবার যেন সেখান থেকেই শুরু করেছেন। আসল লড়াইয়ের আগে বাছাই পর্বে তিনিই সবচেয়ে সফল। ছোট্ট একটা পরিসংখ্যান নিশ্চয়ই এড়িয়ে যায়নি সাকিব ভক্তদের। বাংলাদেশ কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টের ম্যাচ জিতছে, আর সাকিব ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হননি, এমন নজির শেষ পাঁচ বছরে ঘটেনি!