দেশের রাজনীতির বড় দুই নেত্রী বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে বর্তমানে পৃথক দুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জ্বর ও কিডনিসহ নানা সমস্যা নিয়ে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আর ফুসফুসের জটিলতাসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে দুই মাসের বেশি সময় ধরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন ধরে গুলশানের নিজ বাসভবন ফিরোজায় চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। কিন্তু জ্বরের সঙ্গে-সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের কিডনি জটিলতাও দেখা দিলে গত ১২ অক্টোবর ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ফলে কয়েক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। বর্তমানে তিনি এভার কেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক ঢাকা পোস্টকে বলেন, খালেদা জিয়ার বিষয়ে মিডিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে যা বলা দরকার সেটা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানাবেন। আমি শুধু বলতে পারি, উনাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর থেকে তার কিডনি সমস্যাসহ নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনার জন্য বসছে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। মেডিকেল বোর্ডের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।
খালেদা জিয়া চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামের অবস্থা মোটামুটি ভালো। এর বাইরে আমার কিছু বলার নেই। আপনি বরং মহাসচিবকে ফোন দেন।’
জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ম্যাডাম হাসপাতাল আছেন। ডাক্তাররা তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। উনার যেহেতু অনেকগুলো রোগ রয়েছে, সেজন্য অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হচ্ছে। সে অনুযায়ী চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।’ তবে বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী অত্যন্ত অসুস্থ।’
জাপা সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ আগস্ট রওশন এরশাদের ফুসফুসে জটিলতা দেখা দেয় এবং অক্সিজেন লেভেল কমতে শুরু করলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এসময় তাকে বেশ কিছুদিন আইসিইউতে রাখা হয়। পরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে কেবিনে নেওয়া হয়। বর্তমানে ফুসফুসের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত কিছু জটিলতায় ভুগছেন ৭৮ বছর বয়সী এ রাজনীতিবিদ।
রওশন এরশাদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে বিরোধী দলীয় নেতার সহকারী একান্ত সচিব মামুন হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা মোটামুটি ভালো। খুব বেশি সমস্যা নেই বলে আমরা জানতে পেরেছি। পরিবারের পক্ষ থেকে উনার ছেলে সাদ এরশাদ মায়ের চিকিৎসার নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখছেন।